আসামের অর্ধশতের বেশি নাগরিক সংগঠনের একটি সম্মিলিত ফোরাম ঘোষণা করেছে, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন থামাবেন না তারা। নাগরিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত প্লাটফর্ম ‘দি নর্থ ইস্ট ডায়ালগ ফোরাম’ মঙ্গলবার আসামের করিমগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেয়।

খবর পিটিআই’র। ফোরামের সমন্বয়ক ইউ নবকিশোর সাংবাদিকদের বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার ও মণিপুর রাজ্য সরকার টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।  কিন্তু নদীর ভাটিতে বসবাসরত মানুষের নিরাপত্তার দিকটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

টিপাইমুখ বাঁধ, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১০০ কিলোমিটার উজানে ভারতের বরাক নদীর ওপর নির্মিতব্য একটি বাঁধ। টিপাইমুখ নামের গ্রামে বরাক এবং টুইভাই নদীর মিলনস্থল। এই মিলনস্থলের ১ হাজার ৬০০ ফুট দূরে বরাক নদীতে ৫০০ ফুট উঁচু ও ১ হাজার ৬০০ ফুট দীর্ঘ বাঁধ নির্মাণ করে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ভারত সরকার কাজ শুরু করেছে অভিন্ন নদীর উজানে এই বাঁধ ভাটির বাংলাদেশের পরিবেশ আর অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে এমত আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা৷

ভারতের মিজোরাম রাজ্যের কোলাশিব জেলা ও মণিপুর রাজ্যের চুরাচাঁদপুর জেলার সীমান্তে টিপাই নদী যেখানে বারাক নদীর সঙ্গে মিশেছে, সেখানেই নির্মিত হচ্ছে টিপাইবাঁধ। বারাক নদী আসাম হয়ে বাংলাদেশের সিলেট বিভাগে প্রবেশ করেছে সুরমা নদী নামে।

ইউ নবকিশোর সাংবাদিকদের বলেন, “টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থেকে আমরা সরে দাঁড়াবো না। সরকার সাড়া দিলে আমরা খুশি হবো, যদি সাড়া না দেয় তবে আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।” তিনি জানান, বাঁধটি নির্মিত হলে প্রায় ২৬,০০০ হেক্টর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ৭৮ লাখ গাছ কাটা পড়বে। আশেপাশের মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ছাড়াও এতে করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাড়বে। নবকিশোর আরো বলেন, “বাঁধের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। তাতে করে আশেপাশের লোকেদের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব পড়বে।”

অনলাইন ডেস্ক