অতি রক্ষনশীল দেশ সৌদি আরব প্রথমবারের মত তাদের দুই ক্রীড়াবিদকে খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আসর অলিম্পিকে পাঠাচ্ছে৷ পৃথিবীর সকল নারীদের জন্য, বিশেষ করে মুসলিম নারীদের জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন৷ খেলাধুলা করা পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও মৌলিক অধিকার৷

যে দেশে মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা বা মত প্রকাশ করার অধিকার নেই, সে দেশের জন্য এই পদক্ষেপটি যে একটি জুগান্তকারী ঘটনা তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই৷ সৌদি আরবের জাতীয় দলের হয়ে এবারের অলিম্পিক আসরে জুডো'তে প্রতিযোগিতা করবেন ওয়াদজান আলি সিরাজ আব্দুলরাহিম শাহরখানি৷ আর ৮০০ মিটার দৌড়ে মাঠে নামবেন সারাহ আত্তার৷ ক্যালিফোর্নিয়ার পেপের্ডাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন আত্তার৷ স্যানডিয়েগো'র প্রশিক্ষণের মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক পরিষদ (আইওসি) -এর সাথে ভিডিও বার্তায় ১৭ বছর বয়সি সারাহ আত্তার বলেন, "সৌদি আরবের হয়ে প্রথম নারী ক্রীড়াবিদ হিসেবে অলিম্পিক আসরে অংশগ্রহণটাই আমার জন্য বড় অনুপ্রেরণার বিষয়৷ এটা অনেক বড় সম্মানের ব্যাপার এবং আমি আশা করি সৌদি নারীদের আরো বেশি ক্রীড়া জগতের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷"

প্যান্ট এবং মাথায় হিজাব পরে অনুশীলন করতে করতে আত্তার বলেন, "আমার দেশের যেসব মেয়েরা খেলায় অংশ নিতে চায়, আমি তাদের বলবো, এগিয়ে যাও৷ পেছন থেকে কেউ যেন তোমাদের আটকাতে না পারে৷ আমাদের সবার প্রতিভা ও সম্ভাবনা রয়েছে বাইরে বেরিয়ে আসার এবং একটু নড়ে চড়ে কাজ শুরু করার৷"

অলিম্পিক আসরে নারী ক্রীড়াবিদদের মনোনয়নের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর মুখপাত্র মিনকি ওয়ারদেন বলেন, "দুই সৌদি নারী লন্ডন আসরে অংশ নেওয়ার ঘটনা একটি বড় অগ্রগতি৷ তবে এটি আমাদের ভুললে চলবে না যে, এখনও সৌদি আরবের বিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত লাখো মেয়ে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত৷" এখন আইওসি দেশটির বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের জন্য খেলাধুলার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে পারে বলে মনে করেন ওয়ারদেন৷ অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন আন্তর্জাতিকভাবে কোনঠাসা হয়ে পরা দেশটি তার ইমেজ রক্ষা করার শেষ চেষ্টা হিসেবে এই উদ্যোগটি নিয়েছে৷ কেবলমাত্র দুইজন নারীকে অলিম্পিকে খেলার অনুমোদন দিলেই নারীদের প্রতি দেশটির শাসক শ্রেনীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়ে যায়না৷ তবে একটি কথা ভুলে গেলে চলবেনা যে যেকোনো বৃহৎ যাত্রা এক পা দুপা করেই শুরু হয়৷

অনলাইন ডেস্ক