পবিত্র মাহে রমযানে ফ্রান্সে রোজাব্রত পালন করায় দেশটির শিশুদের গ্রীষ্মকালীন শিবিরের ৪ ফরাসী মুসলিম শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এতে ইউরোপীয়ান দেশটিতে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রশ্নে উত্তপ্ত বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বরখাস্ত হওয়া ৪ মুসলিমের আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়ানাত গত মঙ্গলবার দি টেলিগ্রাফ এ জানান, ধর্মীয় দায়িত্ব পালনে কারো উপর কেমন বিচার করলেন আপনি? রমযানেই প্যারিসের উপকণ্ঠে গ্রীন ভিল্লিয়ার্স এ শিশুদের গ্রীষ্মকালীন শিবির থেকে ৪ মুসলিম শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়। নগরী পরিষদের কর্মকর্তারা যুক্তি দেখান যে, খাদ্যগ্রহণ ও পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারটি তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে। জিন্নেভিল্লারস মুখপাত্র জানান, তারা রীতি অনুযায়ী যে শর্ত রয়েছে তার প্রতি সম্মান দেখায়নি। এর ফলে শিশুদের শারীরিক নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারত। কারণ তারা শিশুদের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। পরিষদ আরো জানায়, গত ৩ বছর পূর্বে সড়ক দুর্ঘটনায় একটি শিশু আহত হয়। ঐ সময় রোজা পালনকারী মহিলা ইনস্ট্রাক্টর গাড়ি চালাচ্ছিল যে গাড়িটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়। পবিত্র মাহে রমযানে পূর্ণবয়স্ক মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য গ্রহণ, পান, ধূমপান এবং যৌন মিলন থেকে বিরত থাকে।
অসুস্থ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকলে ভ্রমণেও রোজা থেকে বিরত থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে ইসলামে। রমযানের শিক্ষা হলো ধৈর্য, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং আধ্যাত্মিক এবং পবিত্র এই মাসে মুসলিমরা ইবাদত, পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত ও ভালো কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভে ব্যাপৃত (আত্মত্যাগ) হয়।
ফরাসি মুসলিমরা এই বরখাস্তের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটা ধর্মীয় স্বাধীনার লঙ্ঘন। বরখাস্তকৃত ইনস্ট্রাক্টর সার্মির বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, আপনি কাউকে খাবার গ্রহণ প্রশ্নে বাধ্য করতে পারেন না। ফ্রেন্ড কাউন্সিল অব মুসলিম ফেইথ সমালোচনা করে বলেছেন, রোজা পালন হচ্ছে মুসলিমদের একটি মৌলিক ধর্মীয় অধিকার।
সিএফসিএম মুখপাত্র আব্দাল্লাহ জাকির জানান, ধর্মীয় স্বাধীনতা হচ্ছে মৌলিক অধিকার এবং ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের উপর যে কোন পরিস্থতিতে তা নিষিদ্ধ করতে পারেন না। উল্লেখ্য, ইউরোপের বৃহত্তম সংখ্যক মুসলিম ফ্রান্সে বসবাস করে এবং এ সংখ্যা হচ্ছে ৬০ লাখ।
অনলাইন ডেস্ক