টাই এর বাংলা আভিধানিক অর্থ যদিও গলা বন্ধনী। তথাপি এটাকে অনেকেই বিভিন্ন কিতাবি নামে ডাকে। টাই এর অন্যান্য বিভিন্ন অর্থ যেমনঃ বন্ধন, গিঁট, ফিতা, দড়ি, সরু দড়ি, সূত্র, ডোর, বন্ধনী, নিবন্ধ, নেকটাই, কোঁচকা, পাশ, বাধ্যবাধকতা, নিবন্ধন, গ্রন্থি, খেলার পয়েন্ট অর্জন, নিয়ন্ত্রক বাধা!

টাই এর প্রচলন অনেক পুরাতন সেই ষোলশ শতাব্দীর ও আগের কথা। সর্ব প্রথম টাই এর প্রচলন করে সামরিক ইউনিফর্ম এর অংশ হিসেবে চীন ও রোমান সেনারা। এছাড়া প্রচলিত আছে যে ১৬১৮ সালে অটোম্যান সাম্রাজ্যের বিজয়ের পর ক্রোয়েশিয়া (অস্ট্র-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ) থেকে ক্র্যাক রেজিমেন্ট বা ক্রোয়েশিয়ান সামরিক ফ্রন্টিয়ার তারপর প্যারিস পরিদর্শনে রাজা লুই চতুর্দশ এর সামনে চকচকে গলা বন্ধনী পরে নিজেদের উপস্থাপন করেন। ক্রোয়েশিয়া থেকে ক্রোট এবং ক্রোট থেকে ক্রাভাট এবং এই ক্রাভাট থেকেই পরবর্তীতে টাই শব্দের প্রচলন। কোথাও কোথাও প্রচলিত আছে যে হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এর সেফ বা ওয়েটারদের জন্য গলা বন্ধনী বা টাই এর রীতি প্রচলিত হয়। বিভিন্ন রকমের টাই এর মধ্যে নেক টাই, এস্কট টাই, বো টাই, বোলো টাই, যিপার টাই অন্যতম। বছরের ১৮ অক্টোবর তারিখটি ক্রোয়েশিয়ানরা আন্তর্জাতিক টাই দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। বাংলাদেশে টাই পরাটা এখন আর জাত পাতে নেই। এক সময় শুনতাম গ্রেজুয়েট না হলে নাকি টাই পরা যায় না। কিন্তু একি ... যাই হোক সবাই জানেন। বিস্তারিত লিখলাম না।

বোনাস নিউজ হল গরমে স্যুট-টাই না পরার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশের মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন অফিস আদালতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে সরকার মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক বাধ্যবাধকতা ছাড়া স্যুট টাই পরিহার করার জন্য সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার পুরুষ কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি নির্দেশনা জারি করেছিল। কিন্তু কেউ না মানায় আবার গত জুন ২০১২ তে নতুন করে প্রজ্ঞাপন করা হল যে আনুষ্ঠানিক বাধ্যবাধকতা ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেউ টাই ও স্যুট পরতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, শীতাতপ যন্ত্রের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামানো হলে বিদ্যুতের খরচ অনেক বেড়ে যায়। যদিও গরম কালে স্যুট-টাই পরে আসায় সরকারের বিদ্যুতের ব্যয় কতটা বেড়ে যায়, সে সম্পর্কেও কোন হিসাব পাওয়া যায়নি। সরকারি কর্মকর্তারা এখনও টাই পরেন, তবে যখন কোন অনুষ্ঠান থাকে না। কিন্তু অনুষ্ঠান হলেই টাই পরেন না। আজব লাগলেও ইহাই অতিব সত্য। কারন মিটিং হলে তো মন্ত্রী মিনিস্টার আর আমলারা থাকেন। কিন্তু নিজের অফিসে তো আর অত বাইরের লোকজন থাকে না। কিংবা বড় সাহেবের সামনে গেলে টাই টা খুলে যান। আগে এক সময় বড় সাহেবের সামনে যাওয়ার আগে টাই টা পরে যেত। এরই নাম দিন বদল!

মজার আরও অনেক কাহিনী আছে, প্রায় ই রাস্তায় দেখা যায় লাল টাই পরা আর হাতে একটা ফাইল বা ব্যাগ নিয়ে প্রচণ্ড রোদে গরমে পুড়ছে তবুও টাই খুলে না। মাসাল্লাহ পারেও। আবার অনেকদিন থেকেই কিন্ডারগারটেন বা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বাচ্চা কাচ্চাদের রাবারের ফিতা দিয়ে টাই ঝুলাতেও দেখা যায়।