পেট মোটা হয়ে যাওয়ার জন্য নিদ্রাহীনতাকে দায়ী করেছেন সুইডেনের গবেষকরা। একইসাথে হৃদরোগসহ বেশকিছু জটিলতার জন্য নিদ্রাহীনতাকে দায়ী করেন তারা। বিশেষ করে ৫০ বছরের কম বয়সের মহিলাদের জন্য নিদ্রাহীনতাকে বিপজ্জনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া বেশিক্ষণ বসে থাকা এবং অতিরিক্ত ঘুমকেও মোটা হওয়ার জন্য দায়ী করা হয়েছে। সুইডেনে উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক নতুন গবেষণায় এ চিত্র পাওয়া গেছে। গবেষণার ফলাফল স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, কম ঘুমের কারণে মহিলারা দ্রুত মোটা হন। গবেষক জেনি থেউরেল-হাগলো জানান, পরীক্ষায় কম ঘুমের কারণে ৫০ বছরের কম বয়সী নারীদের তলপেটে চর্বি জমার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মোটা পেট, কম ঘুমের অভ্যাস এবং পেটের চর্বি একই সুত্রে গাঁথা। এজন্য ৭/৮ ঘন্টার চেয়ে কম ঘুমে অভ্যস্ত মানুষ বেশি মোটা হন। আর যেসব মহিলা অসময়ে ঘুমান, তারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। গবেষণায় আর বলা হয়েছে, যারা রাতে ৫ ঘন্টার কম ঘুমান তাদের পেট দ্রুত মোটা হয়ে যায়। আর চর্বির কারণে শরীর রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা হারায়। বাড়ায় হৃদরোগ সংক্রান্ত জটিলতাও। পরীক্ষায় দেখা গেছে, কম ঘুমানো অভ্যস্ত মানুষ এবং পেটে চর্বি আছে এমন মানুষের সমস্যা একই রকম।
এছাড়া কম ঘুমের কারণে শরীরের ক্লোরেষ্টল জমে হরমন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে; কম ঘুমানো মানে বেশে সময় জেগে থাকলে খাওয়াও বেশি হয়। তবে আশার কথা বিজ্ঞানীরা মানব দেহের বাড়তি চর্বিকে পেশিতে রূপান্তরের পথ খুঁজে পেয়েছেন। স্থূলতা নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন ওষুধ নিয়ে গবেষণা চালানোর সময় চর্বিকে পেশিতে রূপান্তরের পথ খুঁজে পান তারা।
মানবদেহে বাড়তি যেসব সাদা চর্বি জমা হয় তাকে দেহের জন্য ‘খারাপ’ হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ এ চর্বিই স্থূলতার জন্য দায়ী। আবিস্কৃত নতুন ওষুধ এসব ‘খারাপ’ চর্বিকে পেশি তৈরিকারী বাদামি চর্বিতে রূপান্তরিত করে। বাদামী চর্বিকে দেহের জন্য ‘ভাল’ চর্বি হিসেবে গণ্য করা হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, দেহের বাদামি চর্বি কোষগুলো ক্যালরি জমা করার কাজে সহায়তা না করে বরং দেহের ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করে। মানবদেহের বাদামি চর্বিকে সক্রিয় করা গেলে বেশি মাত্রায় খাওয়া-দাওয়া করলেও আর ওজন বাড়বে না। লন্ডনের অধ্যাপক স্টিফেন ব্লুমের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে ডেইলি স্টার। তিনি আরো বলেন, এ কারণে দেহে অধিক মাত্রায় ঘাম হবে, গরম লাগবে এবং মানুষ মোটা হওয়ার বদলে শুকনা থাকবে।
এদিকে আমেরিকার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডোমেনিকো অ্যাসিলি বলেছেন, মহামারী আকারে স্থূলতা দেখা দিচ্ছে। কাজেই চিকিৎসার জন্য নতুন এ পদ্ধতি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তবে চিন্তার কারণ হচ্ছে এ চিকিৎসায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে হট ফ্ল্যাশ বা কান-গলা গরম হয়ে ওঠে বা হাড়-ক্ষয় হতে পারে। বিজ্ঞানীরা তাই এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঠেকানোর বিষয়ে গবেষণা শুরু করেছেন।
অনলাইন ডেস্ক