পবিত্র এ রমজান মাসে ধূমপায়ীরা নিজেদের বদভ্যাসটাকে সহজেই শুধরে নিতে পারেন। রোজা রাখার ফলে সারাটা দিন তারা কত সুন্দর পার করে দেন ধূমপান না করেই। শরীরেও যে ধূমপানের চাহিদার সৃষ্টি হয়, তা মোটেই নয়। ব্যাপারটা মানসিক। অর্থাৎ দুর্বল মনের মানুষ হলেই তিনি নেশার কাছে আবার ধরা দেন।
ইফতারের পরই নিজের মনের সাধ মিটিয়ে ধূমপান করেন তারা। চেইন-স্মোকার বা যারা একটির পর একটি সিগারেট ফুঁকে অভ্যস্ত, তাদের তো কথাই থাকে না। অথচ তারা জানেন না, সারা দিন অভুক্ত থাকার পর ইফতার করেই ধূমপান তাদের মৃত্যুকেই তরান্বিত করে। সাবধান! বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, রোজা ভেঙেই যারা ধূমপান করেন, তারা মৃত্যুকে আরও কাছে ডেকে আনেন।
সারা দিন শরীরে তৈরি হয় পানি ও খাবারের চাহিদা। প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত অক্সিজেন, গ্লুকোজেরও। কিন্তু এ সময় ধূমপানের ফলে যদি কোন ব্যক্তি ফুসফুস বা হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত না হন, তবে তারা নিতান্তই ভাগ্যবান। বেশির ভাগ ধূমপায়ী কয়েকটি খেজুর, পানি ও হালকা খাবার খেয়েই সিগারেট ধরান। যখনই তারা এমনটা করেন, সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে প্রাণঘাতী নিকোটিনের চাহিদা বাড়তে শুরু করে। চিকিৎসকরা বলছেন, রমজানের এই সুন্দর মাসটিকে কাজে লাগিয়ে নেশা ছেড়ে দিন। যারা সিগারেট ছাড়ার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েও দুর্বল মানসিকতার কারণে আবারও ঝুঁকে পড়ছেন এ মরণ-নেশার দিকে, তাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। এমিরেটাস ক্লিনিক অ্যান্ড মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক রিয়াজ আহমেদ মিনহাজ এসব কথা বলেন।
তিনি বিষয়টিকে আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলেন, ইফতারের পর ধূমপানের ফলে রক্ত প্রবাহের ধমনীগুলোতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। আর তা পর্যাপ্ত অক্সিজেন পরিবহনে বাধার সৃষ্টি করে। কখনও কখনও রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে সৃষ্টি করতে পারে মারাত্মক কোন হার্টের সমস্যা। বাড়তে পারে রক্তচাপ। এমনটিক হার্টে ব্লক পর্যন্ত হতে পারে। স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় ও কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। আর তা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়। আরব আমিরাতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর বলছিলেন, যারা নিতান্তই সিগারেট ছাড়তে পারছেন না, তাদের উচিত ইফতারের পর শরীরকে তার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে দেয়া। প্রয়োজন বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাবার। তাই বলে যে তারা নিশ্চিন্ত মনে সিগারেট ফুঁকবেন, তা নয়। কারণ, ক্ষতির পরিমাণ কমলেও মৃত্যুঝুঁকি ত্বরান্বিতই হচ্ছে।
এ, কে, আজাদ - বার্তা সম্পাদক