সম্প্রতি রাষ্ট্র ভাষা বাংলাকে নিয়ে একটি স্ক্রীনশট আমাদের কমিউনিটির একজন সোশ্যাল মিডিয়াতে পোষ্ট করে। যদিও ওই স্ক্রীনশটটি শুধুই মজা করার উদ্দেশ্যে পোষ্ট করা হয়েছিল। আমি এই প্রবন্ধে স্ক্রীনশটটি ও স্ক্রীনশটটি প্রকাশকারীর নাম তথ্য সুরক্ষার স্বার্থে প্রকাশ করতে পারছি না।

স্ক্রীনশটটি প্রকাশের পর কমিউনিটির কয়েকজন বাংলা ভাষাকে নিয়ে কটাক্ষ্য করায় আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন। যদিও প্রকাশকারী শুধুই মাত্র মজা করার উদ্দ্যেশে স্ক্রীনশটটি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু খুবই দুঃখের বিষয় স্ক্রীনশটটি প্রকাশ করার পর, প্রকাশকারীকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করা হয় এবং প্রকাশকারীও সামাজিকভাবে জনৈক ভদ্রলোককে হেয় প্রতিপন্ন করেন যা মোটেই কাম্য ছিল না।

এই প্রবন্ধটি লেখার পিছনে একটিই কারণ, তা হচ্ছে বাংলাদেশী কমিউনিটির অন্যতম ব্যক্তিত্ব আমাদের প্রাণপ্রিয় জনাব সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লেখ্যঃ সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান সর্বপ্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন আয়ারল্যান্ডে বাংলদেশী কমিউনিটিকে সুসংগঠিত করার। সেই উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল "বাংলাদেশ এসোসিয়েশ অফ আয়ারল্যান্ড বা সংক্ষেপে BAI" এবং সৈয়দ মোস্তফিজুর রহমান ছিলেন উক্ত সংগঠনের প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। আয়ারল্যান্ডে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশী কমিউনিটিতে যতগুলো সংগঠন গঠিত হয়েছে কোন সংগঠনই BAI এর মতন সাংগঠনিক কার্যক্রম প্রদর্শন করতে পারেনি।

যাই হোক মূল বিষয়ে ফিরে আসি, যখন স্ক্রীনশটটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে একে অপরকে হয়ে করে কথা বলছিল তা দেখে বসে থাকেনি আমাদের প্রাণপ্রিয় মোস্তাফিজুর ভাই। তিনি স্বপ্রনোদিত হয়ে কমিউনিটির দ্বন্ধকে বন্ধ করতে ফেইসবুকে নিচের কমেন্ট পোষ্ট করেন এবং দ্বন্ধটি নিরসনে সমর্থ হন। আমি হুবুহু মোস্তাফিজুর ভাইয়ের কমেন্টটি নিচে দিয়ে দিলামঃ

আপনাদের সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা। শাহিন রেজার লেখা টি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমি বিশ্বাস করি শাহীন রেজা ঠাট্টা করেই এই লেখাটি লিখেছেন। আমার এটিও বিশ্বাস যে কাউন্সিলর আজাদ তালুকদার তিনি ঠাট্টা করে নয় শাহীন রেজার এই লেখাটিকে কটাক্ষ করে বলেছেন যে হা দেরি না করে এখনই করে ফেলো। অনেক বিষয় নিয়েই ঠাট্টা করা যায় কিন্তু সব বিষয় নিয়ে নয়। যেমন মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদান, মুক্তিযুদ্ধে সম্ভ্রম হারানো আমাদের মা বোন, মহান ভাষা আন্দোলন এবং ভাষা আন্দোলনের শহীদান এবং আমাদের মাতৃভাষা সহ আরো কিছু জাতীয় স্পর্শকাতর বিষয়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই কিন্তু এতদসংক্রান্ত আইন রয়েছে। জার্মানিতে হিটলারের সেলুট কেউ দিতে পারে না। এটি বেআইনি।

আপনারা সকলেই জানেন টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর দেখেছি বিমান গুলিতে নিরাপত্তা বিষয়ে ভীষণ কড়াকড়ি। এর মধ্যেই যাত্রীদের কেউ একজন চিৎকার করে উঠল যে তার ব্যাগে বোমা রয়েছে। তারপর গ্রেফতার এবং আদালতে। অপরাধী আদালতে বলল আমি তো ঠাট্টা করেছিলাম। আদালত জানে যে সে ঠাট্টাই করেছিল। কিন্তু আদালত সেটি আমলে নেয়নি। তারপর অভিযুক্ত শ্রীঘরে।

মাত্র কয়েকদিন আগে এক লোক আয়ারল্যান্ড থেকে আমেরিকা যাচ্ছিল তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে মিলিত হতে। বিমানে উঠে তিনি চিৎকার করে বললেন যে উনি নাকি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। পরে যখন দেখা গেল কথাটি মিথ্যা, তিনি পুলিশকে বললেন আমি ঠাট্টা করেছি। বর্তমানে তিনি শ্রী ঘরে আছেন।

সকলের প্রতি আমার অনুরোধ আমরা অবশ্যই বিবেচনায় রাখবো যে কোন বিষয় নিয়েই আমরা যেন একটু সচেতন থাকি। এই বিষয়টির আশা করি এখানেই পরিসমাপ্তি ঘটবে। সবাই ঘরে থাকুন, সবাই সুস্থ থাকুন।

নাসির আহামেদ