আইন ও নিয়ম মেনে চলা এশিয়ার অধিকাংশ দেশেই নেই। দেশ ছেড়ে যখন এরা প্রবাসে আসে- অভ্যাস গুলোও সাথে নিয়েই আসেন। ব্যাবসা, চিকিৎসা, সরকারী, বেসরকারী প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানই প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক পিছিয়ে, সাথে রাস্ট্র থেকে নাগরিকরা যে সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা তা থেকে তারা অনেকটাই বঞ্চিত। 

আর এ জন্যই আমাদেরকে তৃতীয় বিশ্বের লোক বলা হয় অনেকটা তাচ্ছিল্যের সাথে। উন্নত দেশে এসেও এশিয়ান সংস্কৃতির নিয়ম ভাঙ্গার বলয় থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছেনা তারা। বিশ্ব জুড়ে করোনার যে মৃত্যু তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এ থেকে নিরাপদে থাকার জন্য আইরিশ শপ গুলোতে চেস্টার কমতি নেই। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাস্টমার ঢুকানো থেকে শুরু করে প্রায় সব গুলোই করছেন বিচক্ষনতার সাথে।

বিপরীতে অধিকাংশ এশিয়ান শপ গুলোতে এর উল্টো চিত্র। কাস্টমারের জন্য নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার, নেই কোন সামাজিক দূরত্বের বালাই। যত জন ইচ্ছে এক সাথে ঢুকছেন, বের হচ্ছেন ইচ্ছেমত। আবার কিছু দোকানে কৌশলে দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। শতকরা হিসেবে আইরিশ দোকানগুলোর চেয়ে এশীয় দোকানগুলোতে ব্যাবসা অনেকটা বেশী-ই করে থাকেন, তারপরও কাস্টমার নিরাপত্তায় একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ক্রয়ে অলসতায় তাদের কাস্টমারের প্রতি অবজ্ঞারই বহিঃপ্রকাশ।

অথচঃ এদের টাকা দিয়েই নামে, বেনামে এখানে দেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন। বেশ কিছুদিন আগে লন্ডন ও বার্মিংহামে এ নিয়ম ভাঙ্গায় স্বাস্থ্য বিভাগ বেশ অনেকগুলো বাংলাদেশী, পাকিস্তানী ও ভারতীয় গোসারী দোকান গুলোকে বড় এক অংকের জরিমানা গুনতে হয়েছে। গতকাল বেশ কয়েকজন বাংলাদেশীদের সাথে এ বিষয় জানতে চাইলে, তারা বলেন- বাংলাদেশী, ভারতীয়, পাকিস্তানী এ দোকানগুলোতে বাজার করতে গেলে অজানা এক ভয় তাড়িয়ে বেড়ায়।

নিরাপত্তাজনিত অব্যাবস্থাপনার যে করুন হাল, তাতে এ ভাইরাস বাঙ্গালীদের শরীরে ঢুকতে খুব বেশী সময়ের দরকার হবেনা বলে যানালেন বেশ কয়েকজন বাঙ্গালী। দু একজন ক্ষোভের সাথে যানালেন- আমরা সম্পর্কের খাতিরে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে অভিযোগ করিনা সত্য, কিন্তু এর মানে এই নয়, যে ভবিষ্যতে করবোনা। প্রতিটি মানুষ নিজেকেই ভালবাসে সবচেয়ে বেশী। আর কারো জন্য না হলেও নিজেকে এ ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতেও নিরাপদের সব ব্যাবস্থা রাখা জরুরী- এশিয়ান ঘরানার এ শপ গুলোতে। নিয়ম ভাঙ্গার নীতি থেকে বের হয়ে যে দেশে থাকুন, সে দেশের ব্যাবসার নিয়ম, পদ্ধতি মেনে চললে ব্যাবসা একটু কম হবে সত্য, কিন্তু সন্মান ও ভরসার জায়গা গুলোতে যে পরিবর্তন আসবে- সেই পরিবর্তনের আঙ্গিকে এখানে বসবাসরত আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের সাথে ভালবাসার এক সেতুবন্ধন তৈরী হবে।

আর যদি নিয়মহীন, অতি মুনাফা লোভী মানসিকতার গন্ডি থেকে এশীয় শপগুলো বের হতে না পারে- তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম আপনাদের এড়িয়ে চলবে, এটা আমাদের জন্য অশনি শংকেত। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দূর্বল এ অব্যাবস্থাপনা কাটিয়ে নিরাপত্তার সবগুলো পদ্ধতি অবলম্বনে এশীয় দোকানগুলি সফলতার পরিচয় দিবেন বলে বিশ্বাস করেন এখানের এশিয়ানরা।

সৈয়দ জুয়েল
গলওয়ে, আয়ারল্যান্ড