প্রোডাক্ট লাইফ সাইকেলের সাথে সকল বিজনেস স্টুডেন্টসদেরই পরিচয় আছে। একটি প্রোডাক্ট যখন বাজারে আসে তখন সেটি ইন্ট্রোডাকশন ফেইজে থাকে, আস্তে আস্তে কোম্পানিগুলো তাদের মারর্কেটিং, প্রমোশনাল এক্টিভিটির মাধ্যমে সেটিকে গ্রোথ স্টেজে নিয়ে যায়, ধীরে ধীরে সেই প্রোডাক্ট তার সর্বোচ্চ ডিমান্ডে (মেচ্যুরিটিতে) পৌঁছে যায় এবং এরপর থেকে আস্তে আস্তে সেটির ডিমান্ড কমতে থাকে এবং এটি ডিক্লাইন স্টেজে চলে আসে।

উদাহরণস্বরূপ কসকো সাবান, আরসি কোলা, নকিয়া মোবাইল ইত্যাদির উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। এসকল পণ্য একসময় বাজার দাপিয়ে বেড়াতো কিন্তু এখন তাদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

করোনা বিস্তারের সাথে এই কার্ভকে সম্পৃক্ত করা যায়। নিচের করোনা কার্ভের দিকে খেয়াল করলেই দেখা যায় যে শুরুতে বাংলাদেশে করোনা ইন্ট্রোডাকশন ফেইজে ছিলো যেখানে দিনে ২-৩ জন আক্রান্ত হতো। এখন মূলত গ্রোথ স্টেজে আছে যেখানে দিনে ৬০০+ আক্রান্ত হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে টেস্ট হচ্ছে না। তাই এটি কি এখন ম্যাচুরিটি স্টেজের আশেপাশে অবস্থান করছে অথবা আগামী কোন সময়ে সেটি ম্যাচুরিটি স্টেজে যাবে সেটি বলা একপ্রকার অসম্ভব। উন্নত দেশগুলোর লক্ষ লক্ষ পরীক্ষা করার একটাই উদ্দেশ্য হচ্ছে করোনা সংক্রমণের এই ম্যাচুরিটি স্টেজটাকে আইডেন্টিফাই করা, যাতে করে তারা ডিকলাইন স্টেজকে টার্গেট করে তাদের অর্থনীতিকে ক্রমান্বয়ে রিওপেন করতে পারে।

অতএব, বাংলাদেশের উচিত সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে টেস্ট করা। এতে করে প্রতিদিন টিভি স্ক্রিনে আক্রান্তের সংখ্যা দিনে হাজার হাজার দেখা গেলেও একরকম ভালো। অন্যথায় পর্যাপ্ত টেস্ট না করার ফলাফল স্বরূপ মানুষ না জেনে আশেপাশের মানুষকে আক্রান্ত করবে এবং তখন এই গ্রোথ আরো বেশি উর্ধমূখী হয়ে যাবে। উপরন্তু, সেটি ম্যাচুরিটি স্টেজে অনেকটা সময় ধরে অবস্থান করবে এবং সহজেই ডিকলাইন ফেইজে যাবেনা। ইকোনমি রিওপেন করলেও সেটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থেকে যাবে।

আরিফ ভূইয়া
ফিনান্সিয়াল একাউন্টেট
ব্যাংক অব আয়ারল্যান্ড

ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড