ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের মধ্যে হজ্জ একটি স্তম্ভ। পৃথিবীর দিক-দিগন্ত হতে আল্লাহর মেহমান মুসলমানরা হজ্জ করার উদ্দেশ্যে বাইতুল্লাহ শরীফে প্রতিবছর জিলহজ্জ মাসে সমবেত হয়। বাইতুল্লাহ বিশ্ব মুসলিমের মিলন কেন্দ্র।

কিন্তু অতি দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, মুসলিম প্রধান দেশ হয়েও বিশ্বের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের হাজী সাহেবানদের প্রতিবছর পোহাতে হয় নানা সমস্যা। অনন্যা বারের মত এবারও কেন তার বেতিক্রম হবে? হয়ও নি তাই এবং ইতিমধ্যেই নির্ধারিত বিমান না আসায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১২শ’ হযযাত্রী আটকা পড়েছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই যাত্রীদের ঢাকা থেকে নেয়ার কথা থাকলেও সৌদি আরবের বেসরকারি বিমান সংস্থা নাস এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ আটকা পড়া হযযাত্রীদের মঙ্গলবার রাতে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। মঙ্গলবার হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হাব সভাপতি জামাল বলেন, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নাস এয়ারের তিনটি ফ্লাইটে বিলম্বিত হয়। এ কারণে প্রায় ১২শ’ হজযাত্রী এখনো রওয়ানা হতে পারেননি। আটকে পড়া যাত্রীদের রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়েছে জানিয়ে হাব সভাপতি বলেন, আমরা নাস এয়ারের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারা বলেছেন- মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হবে। হজ অফিসার বজলুর রহমান বলেন, নাসের একটি ফ্লাইটে সমস্যার কারণে বেশ কয়েকজন হজযাত্রী এখনো রওনা হতে পারেননি।

এই বিষয়ে নাস এয়ারের বাংলাদেশ কার্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলেও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নাস এয়ারের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের যে উড়োজাহাজটি আসার কথা ছিল, তা সময়মতো ঢাকায় পৌঁছাতে পারেনি বলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এটি প্রায় ১২ ঘণ্টা বিলম্বে রয়েছে। একটি উড়োজাহাজে বিলম্ব হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে পরবর্তীগুলোতেও। তবে মঙ্গলবার রাতের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান তিনি। শাহজালাল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় নাস এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজে (এক্স ওয়াই-৫৯১৯) হজযাত্রীদের সৌদি আরবে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তবে সেই উড়োজাহাজটি সময়মতো ঢাকায় না পৌঁছানোয় আটকা পড়েন হজযাত্রীরা। অন্যদিকে, একই দিন রাত ১০টা ২০ মিনিটে নাস এয়ারের অন্য একটি উড়োজাহাজ ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তাও যেতে পারেনি। এ কারণেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে হজযাত্রীদের। গত বছর হজ পরবর্তী ফিরতি ফ্লাইট পরিচালনায় করতে গিয়ে নাস এয়ারের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল।

এ কারণে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) নাস এয়ারকে কালো তালিকাভুক্তও করে।এই বছর কোনো তৃতীয় বিমান সংস্থা বা থার্ড ক্যারিয়ারকে হজযাত্রী পরিবহনের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। থার্ড ক্যারিয়ার না থাকায় হজযাত্রী পরিবহনে বিশৃঙ্খলা হতে পারে- শুরু থেকে এই দাবি করে আসছিল হজ এজেন্সিগুলো। এ বছর মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ জন হজ করতে যাওয়ার অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন দুই হাজার ৯৬৫ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন এক লাখ ৯ হাজার ৬০৩ জন। বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে এ বছর শুধু বিমান, সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স এবং নাস এয়ারওয়েজই এসব হজযাত্রী পরিবহন করছে।

শিহাব উদ্দিন – বার্তা সম্পাদক