নির্বাচনে কোনো ধরনের অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশের প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিজের দীর্ঘ সংগ্রাম তুলে ধরে তিনি যুক্তরাজ্যের আইন প্রণেতাদের বলেন, “গণতন্ত্র ব্যাহত হয়, এমন কোনো কাজ করা হবে না।” শেখ হাসিনার সরকার এই মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ার পর সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে। ফলে আগামী নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হবে।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না দাবি করে বিএনপিসহ বিরোধী দল নির্বাচনকালীন অর্ন্তর্বতী সরকার পদ্ধতি সংবিধানে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে তাতে সরকার সাড়া দেয়নি। বর্তমান সরকার আমলে জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন ও সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার পর্যায়ে প্রায় ৫ হাজার ২০০ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তথ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচনগুলো নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হওয়ায় বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থীরাও জয়লাভ করেছে। সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কোনো কাজে সরকার হস্তক্ষেপ করছে না বলেও জানান তিনি।
গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু সংসদকে কার্যকর রাখতে সরকারের আন্তরিকতা যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্যদের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি শেখ হাসিনা তাদের জানান, নবম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা সর্বমোট আট দিন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ছয় দিন তিনি বক্তব্য রেখেছেন। বৈঠকের বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় সংসদীয় পদ্ধতি, গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থাসহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশে দীর্ঘ দিন সামরিক শাসন থাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন না হওয়ার কথা এবং সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানও প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন বলে জানান প্রেসসচিব।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থায়নে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথাও বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য রুশনারা আলী সহ লর্ড শেখ, ব্যারনেস টং, কেইথ ভাজ, পিটার বটমলি ও জিম ফিটজপ্যাট্রিক।
তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। শেখ রেহানা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম সাইদুর রহমান খান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ বৈঠকে ছিলেন।
পার্লামেন্ট সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের আগে লর্ড আহমেদ অফ উইম্বেল্ডন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে প্রধানমন্ত্রীর সরব ভূমিকার প্রশংসা করেন।
এ, কে, আজাদ – বার্তা সম্পাদক