বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার পাশাপাশি বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়িয়ে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়েছে মুদ্রানীতি৷ বাংলাদেশ ব্যাংক অনুত্পাদনশীল ব্যয় এবং সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমানোর কথা বলেছে৷ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক "বাংলাদেশ ব্যাংক" -এর গভর্নর ড. আতিউর রহমান চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের মূদ্রানীতি ঘোষণা করেন আজ৷ তিনি বলেন, মূদ্রানীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ হল মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা৷ চলতি অর্থ বছরের বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা বলা হয়েছে৷
তাই সেই লক্ষ্য অর্জনে আগের মতো এবারও সংযত মূদ্রানীতি গ্রহণ করা হয়েছে৷ তিনি আরো বলেন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি, রেমিটেন্স তথা জিডিপির প্রবৃদ্ধির উপর ঋণাত্বক প্রভাব পরতে পারে৷ তথাপি এবারের বাজটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.২ ভাগ৷ যা আগের বাজেটে ছিল ৭ ভাগ৷ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্ণর জানান, এই লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৮.৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এর সঙ্গে অনুত্পাদনশীল ব্যয় ও সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমানো হবে খবর৷ আর বৈদেশিক মুদ্রার পর্যাপ্ত মজুদ রাখার ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷
তবে অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল এই মূদ্রানীতির সফলতার ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে সরকারি খাতে ঋণ কমানো সম্ভব হবে বলে মনে হয়না৷ কারণ দাতাদের কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক প্রবণতা রয়েছে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুর ঋণ বাতিল করায়৷ সরকারকে বড় ধরণের নির্মাণ কাজের জন্য ব্যাংক থেকে বরং আরো বেশি ঋণ নিতে হতে পারে৷
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর বলেছেন, সরকার বড় কোনো অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিলে তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ধরণের সহযোগিতা করবে৷ পদ্মা ব্রিজ তৈরী হলে তা দেশের জিডিপি বাড়তে সাহায্য করবে বলে তিনি মনে করেন৷ দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির জন্য সল্পকালীন মেয়াদে অর্থনীতির উপর চাপ পড়লেও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সরকারের এই উদ্যোগে সর্বাত্বক সমর্থন দিবে৷ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সরকারকে বিভিন্ন সময় সার ও জালানি তেল রপ্তানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার যোগান দিয়ে এসেছে৷
এ, কে, আজাদ – বার্তা সম্পাদক